রাজবাড়ী বালিয়াকান্দির উপজেলায় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিককে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে।আজ শনিবার সকাল নয়টার দিকে উপজেলার নারুয়া ইউয়িনের পাটকিয়াবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন নেককার জনক ঘটনা ঘটেছে।অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম এ কে এম মাহবুবুল হক।ভুক্তভোগী সহকারী শিক্ষিকের অভিযোগ, ছুটি চাওয়া নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হক তাঁকে জুতাপেটা করে আহত করেছেন।
ঐ শিক্ষিকা আরও বলেন যে, আজ সকালে তিনি সাবেক প্রধান শিক্ষক মুকুল কুমার সাহার বাবার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হকের নিকট ছুটি চেয়েছিলেন।তিনি বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ছুটি চেয়েছিলেন।কিন্তু প্রধান শিক্ষক তাঁকে বেলা একটায় যেতে বলেন।এই নিয়ে তাঁদের দুজনের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে মাহবুবুল হক পা থেকে জুতা খুলে তাঁকে আঘাত করতে শুরু করেন। এতে তিনি মুখে ও নাকে আঘাত পান। এরপর তাঁকে চুলে মুটি ধরে মাটিতে শুইয়ে ফেলেন মাহবুবুল হক।
এই ঘটনার খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে ঐ শিক্ষিকার স্বামী ও শিক্ষকনেতারা ঘটনাস্থলে চলে আসেন।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বালিয়াকান্দি উপজেলা কমিটির সভাপতি জনাব শহীদুল ইসলাম বলেন যে, দুই শিক্ষকের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হক এক দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর থেকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে তিনি দাবি করেছেন।
ঐ শিক্ষিকাকে জুতাপেটা করার অভিযোগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হক মুঠোফোনে সংবাদ ৭১ বিডি কে বলেন যে, "স্কুলে সময়মতো আসা ও ছুটি নিয়ে আমাদের মধ্যে সামান্য ঝামেলা হয়েছিল।এ সময় আমি জুতা খুলেছিলাম। তবে পরে আর কিছু হয়নি। পরে আমাদের শিক্ষকনেতারা এসে সমাধান করে দিয়েছেন।" এ কথা বলেই তিনি কল কেটে দিয়েছিলেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি জনাব আবুল কালাম আজাদ বলেন যে, "আজ সকালের ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। খবর পেয়ে এসেছি। এ সময় শিক্ষিকাকে জুতা দিয়ে আঘাত করাসহ চুল ধরে মাটিতে শুইয়ে ফেলার অভিযোগ পেয়েছি। এর আগেও প্রধান শিক্ষক মাহবুবুল হক এক শিক্ষিকাকে ছুরি দিয়ে ভয় দেখিয়েছিলেন।এক দুর্ঘটনার পর থেকে তিনি প্রায়ই রাগ ধরে রাখতে পারেন না।সহকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।"
বালিয়াকান্দির ইউএনও জনাব হাসিবুল হাসান বলেন যে, তিনি মৌখিকভাবে বিষয়টি জেনেছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষিকাকে লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেলে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন।